সৌন্দর্যে একটা খুঁত আছে। মাথার উপর ওই জরির আকাশ দেখা হল না একদল মানুষের, যারা পিঠের বোঝার ভার নামাতে পারল না কিছুতেই। যারা অনুভব করতেই পারল না ফুল কীভাবে ফোটে, তাতে কেমন করে আনন্দে গুঞ্জরন করে অলি। কেমন করে আকাশে আলপনা এঁকে গোধূলির গেরুয়া আঁধারে উড়ে যায় তৃপ্ত পাখিরা। শ্রমের ভারে বেঁকে যাওয়া সেইসব মানুষের পিঠ শুধু শস্যের সৌন্দর্যটুকু টের পায়, তাদের জীবনে বাকিটা আঁধার। বিছানায় শুলে তারা স্বপ্ন দেখতে পায় না ক্লান্তির নিরন্তর খবরদারিতে। তাদের ভাবনার শক্তি খেয়ে একদল পঙ্গপাল পৃথিবীতে রাজত্ব করে। লেখক জানেন না কোথায় দাঁড়ানো যায়। জীবন তাঁকে চোখ বেঁধে নিয়ে এসে বালুচরে ছেড়ে দিয়েছে। চোখ খুলে তিনি দেখেন, জীবন এক অনন্ত ধাঁধার মতো, আপতিক সত্যে বিছানো। ক্রমশ মুক্তির কেন্দ্রে বনিবনা কমে গেছে। রোকে দালতোনের মতো স্বপ্নদ্রষ্টা কবি নিহত হচ্ছেন নিজের কমরেডের হাতে। ভালোবাসাও এক স্বল্পায়ু ক্ষয়রোগী, এই নগরে দ্রুত যার হাওয়া ফুরিয়ে যায়। লেখক ছোট্টো পাখির মতো ছটফট করেন একাকী তর্কের খাঁচায়। ফিরে যেতে চান সহজ অরণ্যে, যে অরণ্য আর কোথাও নেই। পথ থেকে ফেরেন ঘরের দিকে। যে ঘরে বাতি জ্বলেনি অনেকদিন। কিন্তু কোথায় তাঁর ঘর? এই টুকরো গদ্যগুলো খানিকটা আত্মজৈবনিক ধরনের। অথচ সে-অর্থে এ কোনো আত্মজীবনী নয়। অনেকটা যেন গাছে আটকানো পুরোনো ঘুড়ির ছেঁড়া স্বগতোক্তির মতো, যে অনেককাল আগে আকাশে উড়েছিল।
লেখক–আসলে যিনি কবি, তাঁর কথায়, এ লেখা আসলে কিছুই নয়।
Others