জলে ও ডাঙায় যে সমান ভাবে বিচরণ বা বাস করতে পারে তাকে বলে উভচর। প্রাণীদের মধ্যে সাপ, ব্যাঙ, কুমির, হাঁস প্রভৃতি যদি এ গোত্রে পড়ে, মানুষের মধ্যে গাববেড়িয়ার পাঁচু নস্করকে এই শ্রেণীতে ফেলাই যায়। ভূমিহীন পাঁচুর মাছ ধরাই জীবিকা। মেছুড়ে মানুষটার জলে ডাঙায় সমান বিচরণ। ‘উভচর’-এর আক্ষরিক এই অর্থের পাশে ব্যঞ্জনাও বহুমাত্রিক। সেখানে পাঁচু একা নয়, তার গ্রাম, গ্রামের মানুষ, তাদের সংস্কৃতি, এমনকি মানুষ মাত্রেই হয়ে যায় ‘উভচর’। দেহাতি জীবনের সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে গিয়ে পেয়ে যায় নতুন ব্যঞ্জনা। ১৯৭৫-এর জরুরি অবস্থা থেকে ১৯৭৭-এর বামফ্রন্টের আগমন হয়ে দাঁড়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।মানুষের দল-পরিবর্তন, বৃত্তি-পরিবর্তন, এমনকি নারী পরিবর্তনও কেমন যেন দ্বি-মুখী ধারায় চলে। এমন ঘোলা স্রোতে পাঁচু বাদ থাকে না।
এই উপন্যাসে উভচর যাপনের ব্যক্তি স্বভাব ছাড়িয়ে গেছে সার্বজনীনতায়। লেখকের স্বভাবসিদ্ধ ধ্রুপদী ও লোক সমন্বিত ‘উভচরী’ ভাষা তাতে দিয়েছে যোগ্য সঙ্গত। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়সীমা নিম্নবর্গের দৃষ্টি দিয়ে আঁকা গ্রাম জীবনের অনাস্বাদিত আলেখ্য হয়ে উঠেছে ‘উভচর’।
Bikashkanti Midya