Hardcover, Prashanta Kumar Pal, Rabindranath's Biography
‘রবিজীবনী’র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮২ সালের এপ্রিল মাসে। প্রকাশমাত্রই এই জীবনীগ্রন্থ রবীন্দ্রানুরাগী মহলে তোলে বিপুল আলোড়ন। সূচনা করে বিস্তর তর্ক-বিতর্কের। এই আলোড়ন মুখ্যত দুটি কারণে। প্রথম কারণ এই যে, সুপরিচিত ও সুবিস্তৃত একটি ‘রবীন্দ্রজীবনী’ থাকা সত্ত্বেও, আর-একটি জীবনীগ্রন্থ লেখা হল কেন, কোন্ দিক থেকে এর প্রয়োজনীয়তা, অনেকেই তা চট করে বুঝতে পারেননি। দ্বিতীয় কারণটি আরও গুরুতর। প্রশান্তকুমার পাল তাঁর এই ‘রবিজীবনী’তে ‘জীবনস্মৃতি’ কিংবা ‘ছেলেবেলা’য় ছড়িয়ে-থাকা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ-প্রদত্ত বিভিন্ন তথ্যের যেভাবে বিরোধিতা করেছেন, তা অনেকেরই কাছে মনে হয়েছিল খোদার উপর খোদকারির মতো আপত্তিকর। অথচ এই অভিযোগ ও আপত্তির মধ্যেই নিহিত নতুন এই জীবনীগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য এবং প্রয়োজনীয়তা। ‘রবীন্দ্রজীবনী’র গুরুত্ব স্বীকার করেও বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন : ‘একজন অমৃতপুত্রকে আমরা তখনই আবার সহজভাবে তাঁর মর্ত্য-রূপে ভাবতে পারি, যখন সময়ের ব্যবধানে অনেক অবান্তর সঞ্চয় ঝরে পড়ে, আবার সমস্ত তথ্য প্রকাশিত হবারও বাধা থাকে না। রবীন্দ্রনাথকে তাই অপেক্ষা করতে হবে হয়তো দীর্ঘকাল— অন্তত যতদিন-না ‘রবীন্দ্রজীবনী’ পরিবর্ধিত হবার পরেও নতুনতর তথ্য নিয়ে অনুরূপ গ্রন্থ আরও বেরোয়।’ বস্তুত, সেই অপেক্ষারই যোগ্য অবসান ঘটিয়েছেন প্রশান্তকুমার পাল তাঁর ‘রবিজীবনী’ গ্রন্থে। প্রখর অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে তিনি রবীন্দ্রজীবন সম্পর্কে পূর্ব-প্রচারিত প্রত্যেকটি তথ্য বিচার করে দেখেছেন, কোনও সংস্কারের বশবর্তী হননি। তথ্য-বিচার ও নতুনতর তথ্যের প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন এমন বহু মৌলিক উপাদান, যেগুলি এর আগে কেউ ব্যবহারের কথা কল্পনা পর্যন্ত করেননি। ফলে, রবীন্দ্রনাথের বাল্য ও কৈশোরের পূর্ণ চিত্রটি এখানে নিঃসংশয়-রূপে উপস্থাপিত হয়েছে। ভাবী মহাকবির বিকাশের সূত্রটিও পাঠকের হাতে নিপুণভাবে ধরিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রথম খণ্ডের এই আনন্দ-সংস্করণে বিভিন্ন বিতর্ক ও পরবর্তী গবেষণার আলোয় সমস্ত তথ্য পুনর্বিবেচনা করেছেন প্রশান্তকুমার পাল। ফলে সংশোধন ও সংযোজনের মধ্য দিয়ে গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে পূর্ণতর।
Prashanta Kumar Pal
প্রশান্তকুমার পাল-এর জন্ম ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৫ (১৮ মে, ১৯৩৮ খ্রীস্টাব্দ) কলকাতায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কলকাতারই স্কুলে-কলেজে। স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ। সেখান থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলায় অনার্স নিয়ে বি-এ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এম এ পাশ করেছেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনার কাজ পান কলকাতার আনন্দমোহন কলেজে। অধ্যাপনা করতে-করতেই রবীন্দ্রজীবনের বিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রবীন্দ্ররচনা পড়তে গিয়ে অনুভব করেন যে, রবীন্দ্রজীবনীর এক বিশাল অংশ তমসাবৃত অবস্থায় রয়েছে। উৎসাহী হয়ে শুরু করেন গবেষণা। ১৯৭২ থেকে সেই নতুনতর গবেষণার সূত্রপাত। ১৯৮২তে ‘রবিজীবনী’-র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। প্রকাশমাত্রই এ-গ্রন্থ সর্বস্তরে তোলে আলোড়ন। ১৯৮৪তে বেরোয় ‘রবিজীবনী’-র দ্বিতীয় খণ্ড। একইভাবে সমাদৃত এই নতুন খণ্ডও। প্রথম দুটি খণ্ডেরই প্রকাশক-ভূর্জপত্র। ১৯৮৫ সালে ‘রবিজীবনী’-র জন্য দুটি বিশিষ্ট পুরস্কার পান। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহদাস পুরস্কার ও সুরেশচন্দ্র-স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার। রবীন্দ্রজীবন নিয়ে গবেষণার কাজেই পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে উদ্যোগী প্রশান্তকুমার ১৯৮৫ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী প্রবর্তিত বিশ্বভারতীতে অশোককুমার সরকার স্মৃতি বৃত্তির প্রথম প্রাপক রূপে শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রভবনে গবেষণায় রত।
Prashanta Kumar Pal
Language: Bengali
Binding: Hardcover
ISBN: 9788172152741
Pages: 336
Genre: Autobiography & Biography
Publishers: Ananda Publishers
প্রশান্তকুমার পাল-এর জন্ম ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৫ (১৮ মে, ১৯৩৮ খ্রীস্টাব্দ) কলকাতায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কলকাতারই স্কুলে-কলেজে। স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ। সেখান থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলায় অনার্স নিয়ে বি-এ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এম এ পাশ করেছেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনার কাজ পান কলকাতার আনন্দমোহন কলেজে। অধ্যাপনা করতে-করতেই রবীন্দ্রজীবনের বিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রবীন্দ্ররচনা পড়তে গিয়ে অনুভব করেন যে, রবীন্দ্রজীবনীর এক বিশাল অংশ তমসাবৃত অবস্থায় রয়েছে। উৎসাহী হয়ে শুরু করেন গবেষণা। ১৯৭২ থেকে সেই নতুনতর গবেষণার সূত্রপাত। ১৯৮২তে ‘রবিজীবনী’-র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। প্রকাশমাত্রই এ-গ্রন্থ সর্বস্তরে তোলে আলোড়ন। ১৯৮৪তে বেরোয় ‘রবিজীবনী’-র দ্বিতীয় খণ্ড। একইভাবে সমাদৃত এই নতুন খণ্ডও। প্রথম দুটি খণ্ডেরই প্রকাশক-ভূর্জপত্র। ১৯৮৫ সালে ‘রবিজীবনী’-র জন্য দুটি বিশিষ্ট পুরস্কার পান। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহদাস পুরস্কার ও সুরেশচন্দ্র-স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার। রবীন্দ্রজীবন নিয়ে গবেষণার কাজেই পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে উদ্যোগী প্রশান্তকুমার ১৯৮৫ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী প্রবর্তিত বিশ্বভারতীতে অশোককুমার সরকার স্মৃতি বৃত্তির প্রথম প্রাপক রূপে শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রভবনে গবেষণায় রত।