Hardcover, Prashanta Kumar Pal, Rabindranath's Biography
‘একজন অমৃতপুত্রকে আমরা তখনই আবার সহজভাবে তার মর্ত্য-রূপে ভাবতে পারি যখন সময়ের ব্যবধানে অনেক অবান্তর সঞ্চয় ঝরে পড়ে, আবার সমস্ত তথ্য প্রকাশিত হবারও বাধা থাকে না। রবীন্দ্রনাথকে তাই অপেক্ষা করতে হবে হয়তো দীর্ঘকাল অন্তত যতদিন না রবীন্দ্রজীবনী পরিবর্তিত হবার পরেও নতুন তথ্য নিয়ে অনুরূপ গ্রন্থ আরো বেরোয়।’ ৪০ বছর আগের সেই যে লিখেছিলেন বুদ্ধদেব বসু সেই অপেক্ষায় যেন যোগ্য অবসান ঘটালেন প্রশান্তকুমার পাল তার রবিজীবনী গ্রন্থে। নতুনতর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, নবতর তথ্যের মিশেল ঘটিয়ে, যুক্তিসিদ্ধ ভাবে যাবতীয় তথ্য যাচাই করে, একটির-পর-একটি খণ্ডে তিনি তুলে ধরে চলেছেন এ-যাবৎ অনাবিষ্কৃত এক মর্ত্য-রূপী রবীন্দ্রনাথকে। উচ্ছ্বাসের বাষ্পে অস্পষ্ট নয় সেই মূর্তি, কবিকৃত ভাষ্যে খণ্ড নয় তার স্বরূপ। কবিকেও যে জীবনচরিতে খুঁজে পাওয়া সম্ভব, সে-কথা জানাতেই প্রশান্তকুমার পালের ‘রবিজীবনী’। দ্বিতীয় খন্ড 1285 থেকে 1291 (1878-1885) পর্যন্ত রবীন্দ্রজীবনের সাতটি বছরের অনুপুঙ্খ বিবরণ। তিনি আই. সি. এস. পরীক্ষা দেওয়ার ঘোষিত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রথমবার বিলাত-যাত্রা করেছিলেন, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কিন্তু যে মূর্তিকারের হাতে বাংলাদেশের মাটি দিয়ে তার চেহারার আদল গড়ে উঠেছিল, বিলাতে পৌঁছে তাতে আরম্ভ হলো ‘বিদিশি কারিগরি’। প্রচলিত প্রথা ও সংস্কারের বিপরীতে চলার শুরু তখন থেকেই। ‘য়ুরোপ-যাত্রী কোন বঙ্গীয় যুবকের পত্র’ জ্যেষ্ঠাগ্রজ দ্বিজেন্দ্রনাথের সঙ্গে তর্কে-বিতর্কে মুখর হয়ে উঠেছিল, বর্তমান পর্বে তার শেষ হয়েছে সাহিত্যাগ্রজ বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে সত্যের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক বিরোধিতার উত্তেজনায়। অন্যের দ্বারা নিরূপিত সত্যকে তিনি গ্রহণ করবেন না, নিজের বিচার বুদ্ধি অনুভবে তাকে উদ্বোধিত করে নেবেন নিজের ও সকলের মধ্যে— তার জীবনব্যাপী সাধনার তখনই সূত্রপাত। এরইমধ্যে তিনি প্রথাগত রাগরাগিনীকে ভাব প্রকাশের কাজে লাগিয়েছেন, কবিতায় প্রবর্তিত করেছেন ‘হৃদয়ের ছন্দ’। নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীর আনুগত্য করতে গিয়ে যেটুকু বন্ধন মেনে চলতে হত, তার বেদনাদায়ক আত্মহনন সেই শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিয়েছে রবীন্দ্রনাথকে— কৈশোরের হৃদয়ারণ্য থেকে উত্তরণ ঘটেছে যৌবনের রাজপথে।
Prashanta Kumar Pal
প্রশান্তকুমার পাল-এর জন্ম ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৫ (১৮ মে, ১৯৩৮ খ্রীস্টাব্দ) কলকাতায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কলকাতারই স্কুলে-কলেজে। স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ। সেখান থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলায় অনার্স নিয়ে বি-এ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এম এ পাশ করেছেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনার কাজ পান কলকাতার আনন্দমোহন কলেজে। অধ্যাপনা করতে-করতেই রবীন্দ্রজীবনের বিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রবীন্দ্ররচনা পড়তে গিয়ে অনুভব করেন যে, রবীন্দ্রজীবনীর এক বিশাল অংশ তমসাবৃত অবস্থায় রয়েছে। উৎসাহী হয়ে শুরু করেন গবেষণা। ১৯৭২ থেকে সেই নতুনতর গবেষণার সূত্রপাত। ১৯৮২তে ‘রবিজীবনী’-র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। প্রকাশমাত্রই এ-গ্রন্থ সর্বস্তরে তোলে আলোড়ন। ১৯৮৪তে বেরোয় ‘রবিজীবনী’-র দ্বিতীয় খণ্ড। একইভাবে সমাদৃত এই নতুন খণ্ডও। প্রথম দুটি খণ্ডেরই প্রকাশক-ভূর্জপত্র। ১৯৮৫ সালে ‘রবিজীবনী’-র জন্য দুটি বিশিষ্ট পুরস্কার পান। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহদাস পুরস্কার ও সুরেশচন্দ্র-স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার। রবীন্দ্রজীবন নিয়ে গবেষণার কাজেই পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে উদ্যোগী প্রশান্তকুমার ১৯৮৫ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী প্রবর্তিত বিশ্বভারতীতে অশোককুমার সরকার স্মৃতি বৃত্তির প্রথম প্রাপক রূপে শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রভবনে গবেষণায় রত।
Prashanta Kumar Pal
Language: Bengali
Binding: Hardcover
ISBN: 9788170662396
Pages: 282
Genre: Autobiography & Biography
Publishers: Ananda Publishers
প্রশান্তকুমার পাল-এর জন্ম ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৫ (১৮ মে, ১৯৩৮ খ্রীস্টাব্দ) কলকাতায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কলকাতারই স্কুলে-কলেজে। স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ। সেখান থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলায় অনার্স নিয়ে বি-এ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এম এ পাশ করেছেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনার কাজ পান কলকাতার আনন্দমোহন কলেজে। অধ্যাপনা করতে-করতেই রবীন্দ্রজীবনের বিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রবীন্দ্ররচনা পড়তে গিয়ে অনুভব করেন যে, রবীন্দ্রজীবনীর এক বিশাল অংশ তমসাবৃত অবস্থায় রয়েছে। উৎসাহী হয়ে শুরু করেন গবেষণা। ১৯৭২ থেকে সেই নতুনতর গবেষণার সূত্রপাত। ১৯৮২তে ‘রবিজীবনী’-র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। প্রকাশমাত্রই এ-গ্রন্থ সর্বস্তরে তোলে আলোড়ন। ১৯৮৪তে বেরোয় ‘রবিজীবনী’-র দ্বিতীয় খণ্ড। একইভাবে সমাদৃত এই নতুন খণ্ডও। প্রথম দুটি খণ্ডেরই প্রকাশক-ভূর্জপত্র। ১৯৮৫ সালে ‘রবিজীবনী’-র জন্য দুটি বিশিষ্ট পুরস্কার পান। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহদাস পুরস্কার ও সুরেশচন্দ্র-স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার। রবীন্দ্রজীবন নিয়ে গবেষণার কাজেই পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে উদ্যোগী প্রশান্তকুমার ১৯৮৫ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী প্রবর্তিত বিশ্বভারতীতে অশোককুমার সরকার স্মৃতি বৃত্তির প্রথম প্রাপক রূপে শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রভবনে গবেষণায় রত।