Paperback, Baidurya Sarkar, Historical Novel
সিন্ধু সভ্যতা থেকে ছিটকে এসে চার হাজার বছর ধরে বাঙালি যে টিকে আছে, সে কথা ঐতিহাসিকভাবে না মানার কোনো কারণ নেই। গঙ্গাহৃদির উত্থানকে বাঙালির সাম্রাজ্য স্থাপন বলা যেতে পারে। লাবণ্যবতী সেতু এবং পরবর্তী নন্দ সাম্রাজ্যের ভিত বাঙালিরাই তৈরি করেছিল। তারও আগে থেকে সাগরসংগমে কপিল মুনির আশ্রম ও তাঁর সাংখ্যদর্শন বাঙালির আত্মিক সম্পদ।
গুপ্তদের শুরুও এই রাঢ়ের মাটি থেকে। কারোর মতে কালিদাস বাঙালি। যদিও তার ডকুমেন্টেড প্রমাণ মেলেনি। নবরত্নসভায় কালিদাসের সমকালীন বরাহমিহিরের পুত্রবধূ খনা অবশ্য নিশ্চিত বাংলার মেয়ে।
রাজা শশাঙ্ক ও তাঁর সাম্রাজ্য বাঙালির প্রাচীন যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইকন। মাৎস্যন্যায়ের পর গোপালের উত্থানও বাঙালি দার্শনিক ও তাত্ত্বিকদের হাত ধরেই। ততদিনে শান্ত রক্ষিত তিব্বতে পাড়ি দিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করতে এবং শতায়ু বাঙালি শিক্ষক শীলভদ্রর কাছ পাঠ নিয়েছেন ঝুয়ান ঝ্যাং।
মহীপালের গীত ফিরেছে সহজিয়া সাধকের গলায়। তেমনই এক বৌদ্ধ মনীষী অতীশ দীপঙ্কর আবার পাড়ি দিয়েছেন তিব্বতের দিকে। পাল যুগের আদি কবি কৃষ্ণাচার্য (কাহ্ন পা), লোহিত (লুই পা) এবং শবর পা বাংলার ভূমিসন্তান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিস্মৃত সাধকেরা নাড়োপা বা নিগু ডাকিনী। ততদিনে বরেন্দ্রর কৈবর্ত বিদ্রোহ রাজশক্তিকে টলিয়ে দিয়েছে।
পরবর্তীতে রাজা বল্লালের যুগে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম নিয়ে মাতামাতি হলেও শাস্ত্রে, যুদ্ধে বা প্রশাসনে বল্লালের পারদর্শিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সমীচীন নয়। সহজিয়া বৌদ্ধদের থেকে আসা বৈষ্ণব সাধকরা তাই বাঙালির কাব্যে পুষ্ট। জয়দেব গীতগোবিন্দে রাধাকৃষ্ণের যে মধুর ভাব বইয়েছিলেন তা এখনও অম্লান। কাব্যের শ্রীকৃষ্ণের মতো রাজা লক্ষ্মণ থেকে গেছেন ট্র্যাজিক হিরো হিসেবে। মাত্র অষ্টাদশ অশ্বারোহীর কাছে পতনের ইতিহাস অবিশ্বাস্য হলেও রাজা লক্ষ্মণ তার পরেও ফিরে এসে তুর্কি নেতাকে পরাজিত করেছিলেন সে কথা মনে রাখিনি আমরা।
এইসব কাহিনি নিয়ে ‘প্রথম পরাজয়’। তুর্কি নেতা বখতিয়ারের কাছে পরাজিত হয়ে প্রাচীন যুগের অবসান এবং সেইসঙ্গে বাঙালির যাবতীয় গৌরবেরও অবসান বলে ধরে নেওয়া যায়। কাহিনির সূত্রধর হিসেবে আদি বাংলার কাল্পনিক এক ভূমিপুত্র ও তার বংশধারাকে অনুসরণ করা হয়েছে। ইতিহাসকে খুঁজে পেতে সে ছাড়া বিশেষ উপায় ছিল না ।
Others
Category : Novel
Author : Boidurya Sarkar
Publisher : The Cafe Table
Binding Type : Paper Back